নবজাতকের খাবার

বুকের দুধই আপনার শিশুর প্রথম ও প্রধান খাবার। জন্মের পর পর ১ ঘন্টার মধ্যেই বাচ্চাকে বুকের দুধ দিন।
অনলাইনে মেডিসিন অর্ডার করতে ভিজিট করুন দেশের সর্ব বৃহৎ অনলাইন মেডিসিন মার্কেট---
১).
জন্মের পর বাচ্চা মুখে মধু বা চিনির রস দেবেন না।
মুখের কথা মিষ্টি হবার অজুহাতে মুরব্বীরা এটা করে থাকেন ।
এতে শিশু ইনফেকশন হতে পারে ।
তাছাডা মধু ডাইজেস্ট করার এনজাইম এসময় বাচ্চার থাকে না ।
এক বছরের আগে বাচ্চাকে মধু খাওয়ানো যায় না।
২).
৬ মাস পর্যন্ত বাচ্চাকে শুধুমাত্র বুকের দুধ দিন ।
ছয় মাস পুরা হয়ে ৭ মাসে পডলে, আস্তে আস্তে আলগা খাবার শুরু করুন এবং আলগা খাবারের পাশাপাশি ২ বছর পর্যন্ত বুকের দুধ দিন
৩).
জন্মের প্রথম ৩ দিন বাচ্চা একটু কম দুধ পায় ।
তাই বাচ্চাকে বার বার বা ঘন্টায় ঘন্টায় দুধ চুষতে দিন, এ সময় শাল দুধ নামে যা বাচ্চার জন্য অনেক উপকারী।
শালদুধে রোগ প্রতিরোধ কারী উপাদান থাকে।
৪).
সাধারনত ৩ দিনের পর পর্যাপ্ত পরিমান দুধ নামে।
তখন ২ থেকে ৩ ঘন্টা পর পর দুধ দিন।
রাতে at least ২ বার দুধ দেবেন ।
৫).
বেশীর ভাগ মা কমপ্লেইন করে যে তার বাচ্চা দুধ পাচ্চ্ছে না।
সাধারনত বাচ্চা অল্প দুধ টেনেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে, ঘুমিয়ে যায় ।
উঠে আবার কাঁদে, তাতে মা মনে করেন বাচ্চা দুধ কম পাচ্ছে।
কি ভাবে বুঝবেন বাচ্চা ঠিকমতো দুধ পাচ্ছে ।
যদি বাচ্চা সারাদিনে ৬ বার প্রস্রাব করে তাহলে বুঝবেন সে ঠিকমতো দুধ পাচ্ছে।
৬).
সঠিক নিয়মে দুধ খাওয়ালে বাচ্চা ঠিক মতো দুধ পাবে । দুধ খাওয়ানোর পজিসন ও এটাচমেন্ট জেনে নিন
পজিসন হল
: বাচ্চার পুরা শরীর সাপোর্ট দিন
: বাচ্চার পুরা শরীর মায়ের গায়ের সাথে লাগিয়ে নিন
:বাচ্চার মাথা শরীরের সাথে সোজা থাকবে
: বাচ্চা স্তনের দিকে ঘুরানো থাকবে, বাচ্চার নাক নিপল বরাবর থাকবে
এটাচমেন্ট হল
: বাচ্চার চিন ব্রেস্টে লাগানো থাকবে
: বাচ্চার মুখ বড করে খোলা থাকবে
: বাচ্চার নিচের ঠোট বাইরের দিকে বাকানো থাকবে
প্রথম বার ডাক্তার বা নার্সের কাছ থেকে পজিসন গুলে জেনে ও শিখে নিন
৮).
প্রথমে বাচ্চার ঠোট নিপলে লাগান, সে বড করে হা করলে নিপলসহ চার পাশের কালো অংশ (এরিওলা) বাচ্চা মুখে দিন।
বাচ্চা এরিওলাই চুষবে ।
তাহলে ঠিকমতো দুধ পাবে।
কিন্তু যদি শুধু নিপল চুষে নিপল ছিডে যেতে পারে, মা ব্যাথা পাবে, বাচ্চাও দুধ কম পাবে।
তাই স্তনের বেশি অংশ বাচ্চার মুখে দিন, বাচ্চা ঠিকমতো দুধ পাবে।
৯).
বাচ্চা একটি স্তন পুরা শেষ করতে দিন।
বাচ্চা ১৫ থেকে ২০ মিনিট চুষবে।
দুই স্তন থেকে অল্প অল্প খাওয়াবেন না।
একবারে একটা স্তন খাওয়া শেষ হলে অন্য স্তনে দিন।
কারণ দুধের প্রথম অংশ যাকে আমরা foremilk বলি তাতে কার্বোহাইড্রেট ও পানি থাকে ।
পরের অংশ hind milk এ fat থাকে ।
দুই স্তন থেকে অল্প অল্প খেলে সে প্রতিবারই পানি আর কারবোহাইড্রেট পেল ।
সাথে প্রসাব করে পানি বের করে দেবে আর এই কার্বোহাইড্রেট হল ল্যাকটোজ, যেটা বেশি খেলে ওর ল্যাকটেজ এনজাইমটা অপর্যাপ্ত হবে ।
ফলে বেশি বেশি বা ফেনা ফেনা বা সবুজ পায়খানা হবে, মনেহবে ল্যকটোজ ইনটলারেনস হচ্ছে।
বাচ্চা বারেবারে ক্ষুধার্ত হবে।
একটি স্তন অনেকক্ষন ধরে খাওয়ালে hind milk টাও পাবে তাতে fat বেশিবলে এটা ভাঙতে সময় নেয় ।
ফলে বাচ্চা দেরিতে ক্ষুধার্ত হবে । ওজনও দ্রুত বাডবে।
১০).
দুধ খাওয়ার পর স্তনের বাকী দুধ গেলে বের করে নিন, সেটা বাটি চামচে খাইয়ে দিন।
এতে দুধের ফ্লো বাডবে।
কারন স্তন বেশি খালী হলে, বেশি দুধ তৈরী হয়।
১১). গেলে নেওয়া দুধ ৮ ঘন্টা বইরে রাখতে পারবেন ।
এবং ফ্রীজে ২৪ ঘন্টা রাখতে পারবেন।
কর্মজীবী মারা বাইরে যাওয়ার আগে এভাবে দুধ রেখে যেতে পারেন।
১২).
দুধ খাওয়ানোর আগে ও পরে এক গ্লাস করে পানি খেয়ে নিন।
দুধের ফ্লো বাডানোর জন্য ডাল, লাউ, কালো জিরা ইত্যাদি খাবার খেতে পারেন ।
ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে tab omidon খেলেও দুধ বেশি পাবে বাচ্চা।
১৩). বুকের দুধ খেলে কোন কোন বাচ্চা দিনে ১০ থেকে ২৫ বার পায়খানা করতে পারে।
আবার কোন বাচ্চা ৭ দিন পর পর একবার পায়খানা করতে পারে ।
দুটোই নরমাল ।
এট পরে নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যায়।
foremilk বেশি খেলে, মানে দুই স্তন থেকে অল্প অল্প খেলে, বেশি পায়খানা করতে পারে ।
সেক্ষেত্রে এক স্তন থেকে বেশীক্ষন দুধ চুষতে দিন ।
১৪).
প্রথম ৩ মাস পর্যন্ত বাচ্চা দুধ ও বাতাস আলাদা করতে পারেনা ।
দুধের সাথে বাতাসও গিলে ।
একে এরেফেজিয়া বলে ।
এতে বাচ্চা পেটব্যাথা, পেট ফুলে থাকা, বাতাস যাওয়া, মোচর দেয়া ইত্যাদি হতে পারে।
দুধ খাওয়ার পর কাধে রেখে বারপিং করুন ।
এটা ৩ মাস পর নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যায়।
১৫.
বাচ্চাকে গরুর দুধ দেবেন না ।
এক বছরের আগে গরুর দুধ দেয়া যায় না ।
গরুর দুধ দিতে চাইলে ২ বছরের পর দেয়াই ভালো।
১৬ .
বুকের দুধের পাশাপাশি, বোতলে দুধ খাওয়াবেন না ।
এতে বাচ্চার নিপল কনফিউসন হয় ।
পরে বাচ্চা আর বুকের দুধ নাও খেতে পারে।